💁ঐতিহাসিক বাবিন যুদ্ধের ইতিহাস👇

 

৫৬২ হিজরির রবিউস সানি (১১৬৭ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে)  জেনকি সাম্রাজ্যের মহান সেনাপতি শেরকোহ দুই হাজার অশ্বারোহির  ফৌজ নিয়ে মিশরের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন৷ ততক্ষণে ধূর্ত শাওয়ার খ্রিষ্টানদের কাছে সামরিক সহায়তার আবেদন পেশ করে, সেই আবেদনের সাড়া দিয়ে জেরুজালেমের সম্রাট  অ্যামালরিক তার ক্রুসেডার বাহিনী সঙ্গে নিয়ে নীলনদের পূর্বপ্রান্তে এসে পৌঁছে৷ বনু উবাইদিদে/শিয়া ফাতিমিদের  সৈন্যবাহিনীও এখানে এসে মিলিত হয়৷

২২ জুমাদাস সানি মতান্তরে ২৫ জুমাদাল উলা ৫৬২ হিজরি মোতাবেক ১৮ এপ্রিল ১১৬৮ খ্রিস্টাব্দে উভয় বাহিনীর সাক্ষাৎ ঘটে৷ সেনাপতি আসাদুদ্দিন তাদের খোঁজখবর নেওয়ার জন্য গোয়েন্দা পাঠিয়েছিলেন৷ গোয়েন্দারা এসে সংবাদ দিলো, শত্রুপক্ষের সৈন্য অনেক বেশি৷ তাদের প্রস্তুতিও অত্যন্ত শক্তিশালী৷ তারা  আসাদুদ্দিনকে প্রতিহত করার জন্য বেশ মরিয়া হয়ে উঠেছে৷ এ কথা শোনা মাত্রই সেনাপতি আসাদুদ্দিন  শেরকোহ তাদের সঙ্গে লড়াইয়ের ব্যাপারে স্থির সিদ্ধান্ত নেন৷ তিনি মনস্থির করেন, তরবারিই  তাঁর এবং  ক্রুসেডারদের মাঝে ফয়সালা করবে৷

তবে তিনি আপন সাথী -সঙ্গীদের ব্যাপারে আশঙ্কায় পড়ে যান৷ আশঙ্কা হলো, জায়গাটা বিপদজনক৷ এতে মৃত্যুর সম্ভাবনাই বেশি৷ তারা এই ময়দানে লড়াই করতে পারবেনা৷ মুসলিমদের সৈন্যসংখ্যাও কম৷  উপরন্তু তারা নিজেদের ভূখণ্ড ছেড়ে অনেক দূরে অবস্থান করছিল৷ তখন তিনি আপন সাথী -সঙ্গীদের সাথে এ ব্যাপারে পরামর্শ করেন৷ প্রত্যেকেই তাঁকে নীলনদ অতিক্রম করে পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে সামনে ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দেন৷

তারা বলল, এতে কোন সন্দেহ নেই, আমরা অপরাজিত হয়ে যাব৷ আর তখন আমরা কোথায় গিয়ে আশ্রয় গ্রহণ করব৷  এই ভূখণ্ডের সকল সৈন্য, সাধারণ জনগণ, এমনকি কৃষকরা পর্যন্ত আমাদের শত্রু৷  তারা সকলেই আমাদের রক্ত পান করতে উন্মুখ হয়ে রয়েছে৷ এক হাজারের এক বাহিনীর জন্য ১০ হাজারের মোকাবেলা না করাটাই উচিত— উপরন্তু যখন নিজেদের ভূখণ্ড এবং সাহায্যকারীরাও আশপাশে নেই৷  আর শহরের সকলেই তো আমাদের শত্রু৷ তাই সার্বিক বিবেচনায় যুদ্ধ  না করাটাই শ্রেয়৷

তারা সকলেই যখন এই কথা বলছিলেন তখন মামালিক বংশের শরফুদ্দিন বুরগুশ নামক এক সাহসী বীর যোদ্ধা দাঁড়িয়ে যান৷  তিনি বলেন, যে ব্যক্তি নিহত হওয়ার, আক্রান্ত হওয়ার কিংবা বন্দী হওয়ার আশঙ্কা করে, সে যেন রাজা-বাদশাদের কোন খেদমত না করে৷ বরং তার গিয়ে কৃষি কাজ করা উচিত৷ গড়ে গিয়ে নারীদের সাথে সময় কাটানো উচিত৷  আল্লাহর শপথ! যদি তোমরা কোন ধরনের বিজয় কিংবা কোন বিপদে আক্রান্ত হওয়া ব্যতীতই আল-মালিকুল  আদিল নুরুদ্দি(রহ)-এর নিকটে ফিরে যাও,তাহলে অবশ্যই তিনি তোমাদের সকলের বাতা/ বেতন বন্ধ করে দেবেন৷ তোমরা আজ অবধি যত সুযোগ গ্রহণ করেছ, তিনি তার সব ফিরিয়ে নেবেন৷ তিনি বলবেন, তোমরা শত্রুদের থেকে পলায়ন করে এসেছ, আবার মুসলিমদের অর্থ সম্পদ গ্রহন করছ! মিশরের মতো একটি রাষ্ট্রকে কাফেরদের হাতে ছেড়ে এসেছে!

তখন সেনাপতি শেরকোহ বলেন— হ্যাঁ এটাই আমার মতামত এবং আমি এই অনুযায়ী আমল করব৷  সালাহুদ্দিন ইউসুফ ইবনু আইয়ুব তাদের সঙ্গে সহমত পোষণ করেন৷ এরপর আরো অনেকেই তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করার ব্যাপারে মতামত পেশ করেন৷ আর তাদের দলটাই বাড়ি হয়ে যায়৷ এরপর সকলে যুদ্ধ করার জন্য একমত হয়৷

এই ঘটনার মাধ্যমে বুঝা যায়, সেনাবাহিনীর মাঝে সুলতান নুরুদ্দিন জিনকি(রহ)-এর  প্রতি কেমন গাম্ভীর্য এবং ভয়-ভীতি ছিল৷ এরপর তারা সেখানে অবস্থান করতে থাকেন৷ এক সময়ে সেখানে মিশরীয় এবং ক্রুসেডাররা এসে পৌঁছায়৷ আসাদুদ্দিন তখন সৈন্যবাহিনী প্রস্তুত করছিলেন এই যুদ্ধে আসাদুদ্দিন শেরকোহের  সামরিক বুদ্ধিমত্তা প্রকাশ পায় এবং তিনি সৈন্যবাহিনীর মধ্যভাগে সকল রসদপত্র জমায়েত করেন৷  ফলে মাজের অংশটি অনেক বেশি দেখাচ্ছিল৷ আর এ রসদপত্র অন্যত্র রাখার সুযোগও ছিল না৷ শহরবাসীরা এগুলো লুণ্ঠন করে নেওয়ার আশঙ্কা ছিল৷

এরপর তিনি ভাতিজা সালাহুদ্দিন আইয়ুবি(রহ) কে  এই মধ্যভাগের দায়িত্ব প্রদান করেন৷ তিনি তাঁকে এবং তাঁর সাথী -সঙ্গীদের বলেন, ক্রসেডার এবং মিশরীয় বাহিনী ধারণা করবে, হয়তো আমি মধ্যভাগেই রয়েছি৷ তাই মধ্যভাগের মোকাবেলার জন্য তারা নিজেদের অধিকাংশ সৈন্য নিয়োজিত করবে৷ তারা তোমাদের উপর আক্রমণ করলে তোমরা সত্যি সত্যি তাদের উপর আক্রমণ করবে না তোমরা আক্রমণ করে নিজেদেরকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেবে না৷ বরং তোমরা তাদের সামনে পরাজয়ের ভান করবে৷ এরপর যখন তারা ফিরে যেতে চাইবে তখন তাদের পশ্চাদ্ধাবন করবে৷

এরপর তিনি(শেরকোহ)অত্যন্ত সাহসী এবং ধৈর্যশীল সাথী-সঙ্গীদের নিয়ে ডান দিকে অবস্থান করতে থাকেন৷ এ সময় উভয় বাহিনী মুখোমুখি হয়৷  আসাদুদ্দিন যেমন ধারণা করছিলেন, তেমনই ঘটে৷ শত্রুপক্ষ মনে করে, তিনি হয়তো সেনাবাহিনীর মধ্যভাগে রয়েছেন৷ তাই তারা সেখানেই আক্রমণ করে৷ মধ্যভাগে- থাকা মু-৷জাহিদগণ তাদের সঙ্গে একেবারে সাধারণ পর্যায়ে লড়াই করেন৷ তারা পরাজয়ের ভান ধরেন৷

পরিকল্পনার মোতাবেক তারা পিছু হটা শুরু করেন৷ শত্রুপক্ষ তাদের পশ্চাদ্ধাবন শুরু করে৷  তখন সেনাপতি আসাদুদ্দিন শেরকোহ এবং তাঁর সাথী- সঙ্গীরা মধ্যভাগে আক্রমণকারী ক্রুসেডারদের উপর প্রবল ব্যাগে আক্রমণ করেন৷  এবং তাদেরকে পরাজিত করে দেন৷ চতুর্দিকে রক্তের স্রোত বয়ে যায়৷ ময়দানেই ক্রুসেডারদের বহু সংখ্যককে হত্যা করা হয়৷ বন্দী হয় অনেকে৷ অবশিষ্টরা পালিয়ে যায়৷

অন্য ক্রুসেডাররা মধ্যভাগে নিয়োজিত সৈন্যদের পরাজয়বরণের দৃশ্য প্রত্যক্ষ করে তারা লক্ষ্য করে পুরো রণক্ষেত্রে তাদের একজন সাথী- সঙ্গীও অবশিষ্ট নেই৷  এই দৃশ্য দেখে তারাও পলায়ন করা শুরু করে৷

এটি ইতিহাসের এক আশ্চর্য ঘটনা! ইতিহাসের পাঠকরা আশ্চর্য হয়ে যাবে, মাত্র দুই হাজার সৈন্যের এক বাহিনী মিশর এবং উপকূলের যৌথ বিশাল শক্তিশালী ক্রুসেডার বাহিনীকে পরাজিত করে দিয়েছিল!

লিখেছেন- ইতিহাসের পাতা 

মূল-  ইতিহাসবিদ ড.আলি মুহাম্মদ সাল্লাবি ও মাওলানা ইসমাইল রেহান৷💁ঐতিহাসিক বাবিন যুদ্ধের ইতিহাস👇

৫৬২ হিজরির রবিউস সানি (১১৬৭ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে)  জেনকি সাম্রাজ্যের মহান সেনাপতি শেরকোহ দুই হাজার অশ্বারোহির  ফৌজ নিয়ে মিশরের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন৷ ততক্ষণে ধূর্ত শাওয়ার খ্রিষ্টানদের কাছে সামরিক সহায়তার আবেদন পেশ করে, সেই আবেদনের সাড়া দিয়ে জেরুজালেমের সম্রাট  অ্যামালরিক তার ক্রুসেডার বাহিনী সঙ্গে নিয়ে নীলনদের পূর্বপ্রান্তে এসে পৌঁছে৷ বনু উবাইদিদে/শিয়া ফাতিমিদের  সৈন্যবাহিনীও এখানে এসে মিলিত হয়৷

২২ জুমাদাস সানি মতান্তরে ২৫ জুমাদাল উলা ৫৬২ হিজরি মোতাবেক ১৮ এপ্রিল ১১৬৮ খ্রিস্টাব্দে উভয় বাহিনীর সাক্ষাৎ ঘটে৷ সেনাপতি আসাদুদ্দিন তাদের খোঁজখবর নেওয়ার জন্য গোয়েন্দা পাঠিয়েছিলেন৷ গোয়েন্দারা এসে সংবাদ দিলো, শত্রুপক্ষের সৈন্য অনেক বেশি৷ তাদের প্রস্তুতিও অত্যন্ত শক্তিশালী৷ তারা  আসাদুদ্দিনকে প্রতিহত করার জন্য বেশ মরিয়া হয়ে উঠেছে৷ এ কথা শোনা মাত্রই সেনাপতি আসাদুদ্দিন  শেরকোহ তাদের সঙ্গে লড়াইয়ের ব্যাপারে স্থির সিদ্ধান্ত নেন৷ তিনি মনস্থির করেন, তরবারিই  তাঁর এবং  ক্রুসেডারদের মাঝে ফয়সালা করবে৷

তবে তিনি আপন সাথী -সঙ্গীদের ব্যাপারে আশঙ্কায় পড়ে যান৷ আশঙ্কা হলো, জায়গাটা বিপদজনক৷ এতে মৃত্যুর সম্ভাবনাই বেশি৷ তারা এই ময়দানে লড়াই করতে পারবেনা৷ মুসলিমদের সৈন্যসংখ্যাও কম৷  উপরন্তু তারা নিজেদের ভূখণ্ড ছেড়ে অনেক দূরে অবস্থান করছিল৷ তখন তিনি আপন সাথী -সঙ্গীদের সাথে এ ব্যাপারে পরামর্শ করেন৷ প্রত্যেকেই তাঁকে নীলনদ অতিক্রম করে পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে সামনে ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দেন৷

তারা বলল, এতে কোন সন্দেহ নেই, আমরা অপরাজিত হয়ে যাব৷ আর তখন আমরা কোথায় গিয়ে আশ্রয় গ্রহণ করব৷  এই ভূখণ্ডের সকল সৈন্য, সাধারণ জনগণ, এমনকি কৃষকরা পর্যন্ত আমাদের শত্রু৷  তারা সকলেই আমাদের রক্ত পান করতে উন্মুখ হয়ে রয়েছে৷ এক হাজারের এক বাহিনীর জন্য ১০ হাজারের মোকাবেলা না করাটাই উচিত— উপরন্তু যখন নিজেদের ভূখণ্ড এবং সাহায্যকারীরাও আশপাশে নেই৷  আর শহরের সকলেই তো আমাদের শত্রু৷ তাই সার্বিক বিবেচনায় যুদ্ধ  না করাটাই শ্রেয়৷

তারা সকলেই যখন এই কথা বলছিলেন তখন মামালিক বংশের শরফুদ্দিন বুরগুশ নামক এক সাহসী বীর যোদ্ধা দাঁড়িয়ে যান৷  তিনি বলেন, যে ব্যক্তি নিহত হওয়ার, আক্রান্ত হওয়ার কিংবা বন্দী হওয়ার আশঙ্কা করে, সে যেন রাজা-বাদশাদের কোন খেদমত না করে৷ বরং তার গিয়ে কৃষি কাজ করা উচিত৷ গড়ে গিয়ে নারীদের সাথে সময় কাটানো উচিত৷  আল্লাহর শপথ! যদি তোমরা কোন ধরনের বিজয় কিংবা কোন বিপদে আক্রান্ত হওয়া ব্যতীতই আল-মালিকুল  আদিল নুরুদ্দি(রহ)-এর নিকটে ফিরে যাও,তাহলে অবশ্যই তিনি তোমাদের সকলের বাতা/ বেতন বন্ধ করে দেবেন৷ তোমরা আজ অবধি যত সুযোগ গ্রহণ করেছ, তিনি তার সব ফিরিয়ে নেবেন৷ তিনি বলবেন, তোমরা শত্রুদের থেকে পলায়ন করে এসেছ, আবার মুসলিমদের অর্থ সম্পদ গ্রহন করছ! মিশরের মতো একটি রাষ্ট্রকে কাফেরদের হাতে ছেড়ে এসেছে!

তখন সেনাপতি শেরকোহ বলেন— হ্যাঁ এটাই আমার মতামত এবং আমি এই অনুযায়ী আমল করব৷  সালাহুদ্দিন ইউসুফ ইবনু আইয়ুব তাদের সঙ্গে সহমত পোষণ করেন৷ এরপর আরো অনেকেই তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করার ব্যাপারে মতামত পেশ করেন৷ আর তাদের দলটাই বাড়ি হয়ে যায়৷ এরপর সকলে যুদ্ধ করার জন্য একমত হয়৷

এই ঘটনার মাধ্যমে বুঝা যায়, সেনাবাহিনীর মাঝে সুলতান নুরুদ্দিন জিনকি(রহ)-এর  প্রতি কেমন গাম্ভীর্য এবং ভয়-ভীতি ছিল৷ এরপর তারা সেখানে অবস্থান করতে থাকেন৷ এক সময়ে সেখানে মিশরীয় এবং ক্রুসেডাররা এসে পৌঁছায়৷ আসাদুদ্দিন তখন সৈন্যবাহিনী প্রস্তুত করছিলেন এই যুদ্ধে আসাদুদ্দিন শেরকোহের  সামরিক বুদ্ধিমত্তা প্রকাশ পায় এবং তিনি সৈন্যবাহিনীর মধ্যভাগে সকল রসদপত্র জমায়েত করেন৷  ফলে মাজের অংশটি অনেক বেশি দেখাচ্ছিল৷ আর এ রসদপত্র অন্যত্র রাখার সুযোগও ছিল না৷ শহরবাসীরা এগুলো লুণ্ঠন করে নেওয়ার আশঙ্কা ছিল৷

এরপর তিনি ভাতিজা সালাহুদ্দিন আইয়ুবি(রহ) কে  এই মধ্যভাগের দায়িত্ব প্রদান করেন৷ তিনি তাঁকে এবং তাঁর সাথী -সঙ্গীদের বলেন, ক্রসেডার এবং মিশরীয় বাহিনী ধারণা করবে, হয়তো আমি মধ্যভাগেই রয়েছি৷ তাই মধ্যভাগের মোকাবেলার জন্য তারা নিজেদের অধিকাংশ সৈন্য নিয়োজিত করবে৷ তারা তোমাদের উপর আক্রমণ করলে তোমরা সত্যি সত্যি তাদের উপর আক্রমণ করবে না তোমরা আক্রমণ করে নিজেদেরকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেবে না৷ বরং তোমরা তাদের সামনে পরাজয়ের ভান করবে৷ এরপর যখন তারা ফিরে যেতে চাইবে তখন তাদের পশ্চাদ্ধাবন করবে৷

এরপর তিনি(শেরকোহ)অত্যন্ত সাহসী এবং ধৈর্যশীল সাথী-সঙ্গীদের নিয়ে ডান দিকে অবস্থান করতে থাকেন৷ এ সময় উভয় বাহিনী মুখোমুখি হয়৷  আসাদুদ্দিন যেমন ধারণা করছিলেন, তেমনই ঘটে৷ শত্রুপক্ষ মনে করে, তিনি হয়তো সেনাবাহিনীর মধ্যভাগে রয়েছেন৷ তাই তারা সেখানেই আক্রমণ করে৷ মধ্যভাগে- থাকা মু-৷জাহিদগণ তাদের সঙ্গে একেবারে সাধারণ পর্যায়ে লড়াই করেন৷ তারা পরাজয়ের ভান ধরেন৷

পরিকল্পনার মোতাবেক তারা পিছু হটা শুরু করেন৷ শত্রুপক্ষ তাদের পশ্চাদ্ধাবন শুরু করে৷  তখন সেনাপতি আসাদুদ্দিন শেরকোহ এবং তাঁর সাথী- সঙ্গীরা মধ্যভাগে আক্রমণকারী ক্রুসেডারদের উপর প্রবল ব্যাগে আক্রমণ করেন৷  এবং তাদেরকে পরাজিত করে দেন৷ চতুর্দিকে রক্তের স্রোত বয়ে যায়৷ ময়দানেই ক্রুসেডারদের বহু সংখ্যককে হত্যা করা হয়৷ বন্দী হয় অনেকে৷ অবশিষ্টরা পালিয়ে যায়৷

অন্য ক্রুসেডাররা মধ্যভাগে নিয়োজিত সৈন্যদের পরাজয়বরণের দৃশ্য প্রত্যক্ষ করে তারা লক্ষ্য করে পুরো রণক্ষেত্রে তাদের একজন সাথী- সঙ্গীও অবশিষ্ট নেই৷  এই দৃশ্য দেখে তারাও পলায়ন করা শুরু করে৷

এটি ইতিহাসের এক আশ্চর্য ঘটনা! ইতিহাসের পাঠকরা আশ্চর্য হয়ে যাবে, মাত্র দুই হাজার সৈন্যের এক বাহিনী মিশর এবং উপকূলের যৌথ বিশাল শক্তিশালী ক্রুসেডার বাহিনীকে পরাজিত করে দিয়েছিল!

লিখেছেন- ইতিহাসের পাতা 

মূল-  ইতিহাসবিদ ড.আলি মুহাম্মদ সাল্লাবি ও মাওলানা ইসমাইল রেহান৷